মোঃ জামিল হোসেন :
চাঁপাইনবাবগঞ্জের ভোলাহাট উপজেলার ইমামনগর গ্রামের রজব আলী কোয়েল পাখির খামার করে স্বাবলম্বী হয়েছেন। ইচ্ছে থাকলে উপায় হয় এই প্রতিপাদ্যকে বাস্তবে তিনিই রুপ দিলেন। ৫ বছর পূর্বে গরু বিক্রি করে ২ লক্ষ ২০ হাজার টাকা নিয়ে ব্যবসা শুরু করেন। প্রথমে ২৫০০ টি কোয়েল পাখির বাচ্চ হ্যাচারী থেকে কিনে পালন শুরু করেন। এরপর রজবকে আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। এবং ১ম বছরে কয়েকমাস পরেই তিনি লাভের মুখ দেখে স্বপ্ন দেখা শুরু করেন। আর এভাবেই যাত্রা শুরু হয় রজব আলীর এগিয়ে চলার পথ। বর্তমান তার খামারে ৩৫০০কোয়েল পাখি রয়েছে। তিনি আগামী বছর আরো ১২০০০ হাজার কিনবেন। আর বর্তমানে পাঁচ মাস বিরতিহীন ভাবে প্রতিদিন এই ৩৫০০ কোয়েল পাখিগুলো গড়ে ডিম দেয় ২৮০০-৩০০০ হাজার মতো। প্রতিটি ডিম বাজারে পাইকারি হিসাবে ২- ২.৫০টাকা দরে বিক্রি করেন। বর্তামানে তার প্রতিমাসে আয় ৮০-৯০ হাজার টাকা। খামারী রজব জানায়,পাখিকে সোনালী মুরগীর খাবার ফিড খেতে দিতে হয় আমার ৩৫’শ পাখি দিনে ফিড খায় ৭৫ কেজি ও পানি খায় ১৮০ লিটার এছাড়া তিনি পাখিকে পানির সাথে নিয়মিত ওষুধ ও ভিটামিন খেতে দেন।
হ্যাচারি থেকে কোয়েলেরব বাচ্চা কিনে এনে খামারে পালন করেন। ৪০ দিন পর থেকে পাখিতে ডিম দেওয়া শুরু করে। ডিম দেওয়া শুরু করলে প্রতিদিন খাদ্য ওষুধ বাবদ খরচ হয় ৩০০০-৩৫০০ টাকা।
খামারি রজব -বরেন্দ্র নিউজকে জানায়, প্রায় ৫ বছর ধরে হাঁস পালন করে আসছি, আর হাঁসের খামারের আয় থেকে বর্তমান গরু-ছাগল ও ব্যাংকে কিছু টাকা জমাতে পেরেছি এবং পরিবার- পরিজনকে নিয়ে সুখে-শান্তিতে বর্তমানে দিনযাপন করে আসছি।
অথচ ৫ বছর পূর্বে যখন কৃষিকাজ করতাম তখন অনাহারে-অর্ধাহারে পরিবার-পরিজনকে নিয়ে কোনো রকমে দু’বেলা দু-মুঠো ভাত খেতে পেরেছি। সবকিছুই আল্লাহ তায়ালার ইচ্ছা।
এসময় স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায় এক সময় রজব আলীর খুব অভাবের সংসার ছিলো,এবং খুব কষ্টে দিন পার করতে হতো তাকে।
কিন্তুু এখন সে কোয়েল পাখি পালন করে অনেকটাই স্বাভলম্বী। তার কোয়েল পাখির খামার দেখে অত্র এলাকায় অনেক শিক্ষিত বেকার যুবকরা কোয়েলের খামার গড়ে তুলতে শুরু করেছে। এতে বেকারত্ব দূর হবে এই প্রত্যাশা করছি।
এ বিষয়ে ভোলাহাট উপজেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা ডা.আবদুল্লাহ বলেন, আমাদের ভোলাহাট উপজেলায় মোট ৫ টি কোয়েল পাখির খামারির প্রায় সাড়ে ১২ হাজার পাখি আছে।তার মধ্যে রজব অন্যতম অভিজ্ঞ বাকি ৪জন নতুন খামারী।
কোয়েল পাখি পালনের উপযোগী পরিবেশের কারণে অনেকেই নিজ উদ্যোগে হাঁসের খামার গড়ে তুলে যেমন স্বাবলম্বী হচ্ছেন, তেমনি ডিম ও মাংসের চাহিদা মেটাচ্ছেন। আমরা প্রাণি সম্পদ বিভাগের পক্ষ থেকে কোয়েল পাখি পালনকারীদের পরামর্শ ও সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছি।
Leave a Reply